শিখো বাংলায়.কম: আচ্ছা,আপনি কি বলতে পারেন কোন সাহাবীকে জীবন্ত শহীদ বলা হতো?
মনে করার চেস্টা করেন।কি হলো? পারবেননা?
আসলে না পারারই কথা।তারচেয়ে বরং সালমান শাহের প্রথম ছবি কিংবা সালমানের খানের সুপার হিট মোভিগুলোর নাম কিংবা বক্স অফিস হিট করা মোভির নাম, মেসি,রোনালদোদের পুরষ্কারের সংখ্যা অথবা প্রথম বাইসাইকেল কিক কে মেরেছিলেন এগুলো জিজ্ঞেস করলে এক নিমিষেই বলে যেতে পারতাম।আমি কি ভুল বলছি?
এইসব জিনিষ নিয়ে আমরা যেভাবে গবেষণা করি ইসলাম নিয়ে তার সিকিভাগও করিনা।আর করার সময়ই বা কোথায়? আমরাতো অনেক ব্যস্ত।এগুলোতো হুজুরদের কাজ! আপনি কি জানেন, জাবির ইবন আব্দিল্লাহ মিশর যাত্রা করেন; একটি উট কিনেন সেখানে যাওয়ার জন্য। আর সেখানে পৌঁছা পর্যন্ত একটানা চালিয়ে যান। অতঃপর উকবাহ ইবন আমের কে একটি মাত্র হাদিসের ব্যপারে জিজ্ঞেস করে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করেন। দ্বীন জানার ব্যাপারে কত আগ্রহী ছিলেন তারা।আর আমরা সময়ই পাইনা!
যাহোক,জীবন্ত শহীদ উপাধি পেয়েছিলেন সাহাবী তালহা বিন উবায়দুল্লাহ আত তাইমি(রাদিয়াল্লাহু আনহু)।নবীজি ﷺ তার সম্পর্কে বলেন,
“যদি কেউ প্রকৃতপক্ষে শাহাদাতপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে দেখে আনন্দিত ও তার চক্ষুদ্বয়ককে শীতল করতে চায়, তাহলে সে যেন তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ(রাদিয়াল্লাহু আনহু) কে দেখে।”

উহুদের কঠিন ময়দানে যখন পরিস্থিতি মুসলমানদের প্রতিকূলে চলে যায় তখন নবী ﷺ অরক্ষিত হয়ে পড়লে আনসারদের এগারো জন ও মুহাজিরদের মধ্যে তালহা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) নবী ﷺ এর সঙ্গে দৃঢ় অবস্থান নেন।অবস্থা আরো বেগতিক হলে একে একে এগারোজন আনসার শাহাদাত বরণ করেন। নবী ﷺ এর দাত মুবারক শহীদ হয়ে যায়,তার চেহারা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরুতে থাকে।তখন নবী ﷺ এর সাথে কেবল তালহা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) ছিলেন।তিনি একা তিন তিনবার শত্রুপক্ষকে বাধা দিয়ে নবী ﷺ কে উহুদ পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে আসতে সক্ষম হন।
এই সময় আবু বকর সিদ্দিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) দৌড়ে এসে দেখেন তালহা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর গায়ে ৭০ থেকে ৭৯ টি আঘাতের চিহ্ন।তার এক হাতের কবজি নেই।অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন।তার শরীরে যে আঘাত ছিলো তা একজন মানুষের মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেচে যান।
এরপর যখনই উহুদের যুদ্ধের প্রসঙ্গ আস্তো আবু বকর সিদ্দিক(রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলতেন,’উহিদ যুদ্ধের সারাটা দিন ছিলো তালহা(রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর।'[সাহাবীদের বিপ্লবী জীবন ২]
…
আহ! কত ত্যাগ স্বীকার করেছেন তারা ইসলামের জন্য। আর আমরা! লজ্জা হয় নিজেকে নিয়ে।