শিখো বাংলায়.কম: মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পশ্চিম রাজৈর মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত রত্তন খাঁ’র প্রথম পক্ষের একমাত্র ছেলে আইয়ুব আলী খাঁ (৬০) ওরফে পাগলা আয়োব। পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করা ৪৮ হাজার টাকা দাদা-দাদি ও বাবা-মায়ের নামে নিজ গ্রামের মসজিদে দান করে দেন তিনি।
জন্মসূত্রে শারীরিক প্রতিবন্ধী তিনি। তার আপন বলতে তেমন কেউ নেই। এ জন্যই সব পৈতৃক জমিন বিক্রি করে দান করে দেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর বয়সে মা মারা যাওয়ার পর আইয়ুবের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বাবা বাড়িতে না থাকলেই আইয়ুবের ওপর নির্মম অত্যাচার করত সৎমা। পরে বাড়ি থেকে বের করে দিলে কখনো রাস্তায় আবার কখনো প্রতিবেশীদের রান্না ঘরে থাকত সে (আয়োব)। একপর্যায়ে একই এলাকার চাচাতো বোন কোমেলা বেগম আইয়ুবকে ছোট একটি হাঁসের ঘরে থাকতে দেয়।
এভাবেই তার জীবন কাটছিল। হঠাৎ পশ্চিম রাজৈর মধ্যপাড়ার মসজিদটি ভেঙে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়। এ খবর পেয়ে আইয়ুব আলী তার আশ্রয়দাতা কোমেলা বেগমকে নিজের পৈতৃক সম্পত্তির ভাগের অংশ বিক্রির কথা বলেন। পরে আশ্রয়দাতা চাচাতো বোনের ছেলেসহ এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পৈতৃক সম্পত্তির ভাগের অংশ বিক্রি করা ৪৮ হাজার টাকা মসজিদে দান করেন।
কোমেলা বেগম জানান, আইয়ুব আমাকে প্রায়ই বলত, আমার বাবার সম্পত্তি আমি যতটুকু পাব সেটা আমাকে বিক্রি করে দাও। এটা আমি মসজিদে দেব। আমার সম্পত্তি থাকলে খাবে কে? আইয়ুব আলী জানান, আমার টাকার দরকার নাই। আমি আমার বাবা-মা এবং দাদা-দাদির নামে মসজিদে দান করেছি। আল্লাহ আমাকে দেখবে।

মসজিদের ইমাম জানান, তিনি একজন অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি হয়েও মৃত বাবা-মায়ের জন্য অনেক বড় দান করেছেন। বৃত্তবানরাও যা খুব কম করে। প্রতিটি সন্তানেরই কর্তব্য বাবা-মায়ের হক আদায় করা।