শায়খ মাহমুদুল হাসান।।
এক লোক ইবরাহীম ইবনে আদহাম রহ.-এর কাছে এলো। তিনি ছিলেন আধ্যাত্মিক চিকিৎসক। লোকটি বলল: আমি বড়ই পাপী, আমাকে কিছু উপদেশ দিন। পাঁচটি বিষয় যথাযথ হৃদয়ঙ্গম করলে তুমি পাপাচার থেকে বিরত থাকতে পারবে।
লোকটি অত্যন্ত কৌতুহলী হয়ে বলল -বলুন, কী সে পাঁচ বিষয়? অপরাধ করতে ইচ্ছে করলে আল্লাহর দেয়া রিযিক থেকে কিছু খাবে না।
লোকটি বিস্মিত হয়ে বলল ইবরাহীম, এ কি বলছেন? সব রিযিকই তো আল্লাহর দেয়া।
একথা যখন তোমার জানাই আছে, তাহলে তুমিই বলো, তাঁর দেয়া রিযিক খেয়ে তাঁর অবাধ্যতা করা কি সমীচীন? না। আচ্ছা ইবরাহীম, দ্বিতীয়টি বলুন! -পাপ করতে ইচ্ছে করলে আল্লাহর জমিন থেকে বের হয়ে যাবে। লোকটি পূর্বের চেয়েও বেশী হতবাক হয়ে বলল :
ইবরাহীম, তা কি করে হয়! সমস্ত জমিনই তো আল্লাহর।
তাহলে তুমি এ কথা মেনে নাও কি করে, তুমি আল্লাহর জমিনে থেকে তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করবে? না সম্ভব নয়। তা ইবরাহীম, তৃতীয় বিষয় কী?
-যখন পাপাচার করতে মন চাইবে, তখন এমন স্থান নির্বাচন করবে যেখানে আল্লাহ তা’আলা দেখবেন না। সেটা কী করে হয়? তিনি তো সব রহস্য জানেন। নিকষ অন্ধকার রাতে বৃহদাকার পাথরের ওপর চলা পিঁপড়ার পদশব্দ পর্যন্ত তিনি শুনেন।
একথা জেনে কি গুনাহ করা যায়? -না। চতুর্থ কথা কী? যখন যমদূত আসবে, তুমি বলবে, আরেকটু সময় দাও। কি করে সেটা হবে? আল্লাহ বলেছেন, ‘যখন তোমাদের মৃত্যুর সময় এসে যাবে ফেরেশতারা কিছুক্ষণ বিলম্ব করবে না, কিছুক্ষণ আগামও করবে না।’ তা-ই যদি হয়, তাহলে মুক্তির পথ কী?

ঠিক আছে, পঞ্চমটি কী? -যখন জাহান্নামের দূত তোমাকে পাকড়াও করতে এসে যাবে, তুমি তাদের সঙ্গে যেও না। পঞ্চম কথাটি শুনতেই লোকটি ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। বলল যথেষ্ট হয়েছে ইবরাহীম! আমি তাওবা করছি। এরপর লোকটি জীবনের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত ইবাদতে নিমগ্ন ছিল।
লেখক: বৃটেনের বাংলাদেশী ইসলামী স্কলার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব