মাওলানা ফজলুল বারী ।।
শিখোবাংলায়.কম: আল্লাহর দেয়া এ জীবন একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির জন্য বিলিয়ে দেয়া জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ আমল। শাহাদাতের তামান্না প্রতিটি মুমিনেরই ঈমানী সম্বল। সাহাবায়ে কেরাম এর জীবন্ত নমুনা। স্বয়ং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাহাদাতের তামান্না হাদীসে বর্ণিত হয়েছে এভাবে-
.وَالّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوَدِدْتُ أَنِّي أُقْتَلُ فِي سَبِيلِ اللهِ، ثُمّ أُحْيَا، ثُمّ أُقْتَلُ، ثُمّ أُحْيَا، ثُمّ أُقْتَلُ، ثُمّ أُحْيَا، ثُمّ أُقْتَلُ
যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! আমার আকাঙ্ক্ষা হয়- আমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হব। তারপর আবার আমাকে জীবিত করা হবে, আমি আবার শহীদ হব। আবার আমাকে জীবিত করা হবে, আমি আবার শহীদ হব। আবার আমাকে জীবিত করা হবে, তারপর আমি আবার শহীদ হব। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২৭৯৭
মুমিন মাত্রই শাহাদাতের তামান্না রাখে। কারণ, শাহাদাতের তামান্না না থাকা নিফাকের আলামত। আর আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার সব গোনাহ মিটিয়ে দেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

.الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللهِ يُكَفِّرُ كُلّ شَيْءٍ، إِلّا الدّيْنَ
আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত সকল গোনাহ মিটিয়ে দেয়, তবে ঋণ ছাড়া। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৮৬
আরেক বর্ণনায় এসেছে-
.يُغْفَرُ لِلشّهِيدِ كُلّ ذَنْبٍ إِلّا الدّيْنَ
শহীদের সকল গোনাহ ক্ষমা করা হবে, তবে ঋণ ছাড়া। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৮৮৬
এখানে একটি বিষয় বিশেষ লক্ষ্যণীয়। ঋণ কত গুরুতর বিষয় যে, শহীদের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, কিন্তু ঋণ মাফ করা হবে না। একটি বর্ণনায় বিষয়টি এভাবে উপস্থাপিত হয়েছে-
عَنْ أَنَسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: القَتْلُ فِي سَبِيلِ اللهِ يُكَفِّرُ كُلّ خَطِيئَةٍ، فَقَالَ جِبْرِيلُ: إِلّا الدّيْنَ، فَقَالَ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: إِلّا الدّيْنَ
আনাস রা. বর্ণনা করেন, নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন-
.القَتْلُ فِي سَبِيلِ اللهِ يُكَفِّرُ كُلّ خَطِيئَةٍ
আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাত সকল গোনাহ মিটিয়ে দেয়।
তখন জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন-
.إِلّا الدّيْنَ
তবে ঋণ ছাড়া।
তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বললেন-
.إِلّا الدّيْنَ
তবে ঋণ ছাড়া। -জামে তিরমিযী, হাদীস ১৬৪০
প্রথমে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম إِلّا الدّيْنَ এ অংশ বলেননি, ফলে জিবরীল আ. সতর্ক করলেন এবং এ অংশ যুক্ত করে দিলেন। ঋণ কত গুরুতর বিষয় তা উপলব্ধি করার জন্য এ একটি বর্ণনা-ই যথেষ্ট।
আল্লাহ আমাদের ঋণসহ সব ধরনের বান্দার হক থেকে হেফাজত করুন, ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিন এবং শাহাদাতের মৃত্যু নসীব করুন- আমীন।